সম্মান
পাশের বাড়ির কাকিমার কাছ থেকে মায়ের লবণ চেয়ে নিয়ে আসা দেখে আমি খুব আশ্চর্য হলাম। কেনোনা আজই সকাল বেলায় এক প্যাকেট লবণ কিনে এনেছি।মা কেন আবার কাকিমার থেকে লবণ নিয়ে আসলো?আমাকে বিষয়টা বড্ড বেশী গোলমেলে লাগলো। বাধ্য হয়ে মাকে জিজ্ঞেস করলাম।
মা, আমার কৌতুহল বুঝতে পেরে, মৃদু হেঁসে, খুব শান্ত সুরে বললো, ইচ্ছে করেই চেয়ে নিয়ে এলাম। তোর কাকিমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়, সেটা তো তুই খুব ভালো করে জানিস। তোর কাকিমা সব সময় কিছু না কিছু, এটা ওটা চাইতে আসে।
আমিও মাঝে মাঝে তার কাছ থেকে দু চারটা কাঁচা লংকা, কিংবা একটু আধটু লবণ চেয়ে নিয়ে আসি, যাতে সেও যেন ভাবে তাদের থেকেও আমারও কিছু না কিছুর দরকার পড়ে। আমি যদি কখনোই কিছু না চাইতে যায়, তোর কাকিমা হয়তো লজ্জা পাবে। ফলে তার আত্মসম্মানে ঘা লাগতে পারে ও হীনমন্যতায় ভুগবে। তাই আমিও কিছু না কিছু চাইলে, সেই অস্বস্তি বোধটা থাকবে না এবং বিনা দ্বিধায় সে যখন খুশি তাই চাইতে পারবে। তাছাড়া আমরা তো যথেষ্ট সচ্ছল আর নিকট প্রতিবেশী হিসেবে আমরাই যদি সাহায্য না করি তবে কে করবে?
মায়ের কথা শুনে, আমার বুকটা, গর্বে ফুলে উঠলো। এত্তো বড়ো হৃদয় আমার মায়ের ও এতো মহৎ চিন্তাধারা তাঁর।
"মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা নিঃসন্দেহে মহৎ অনুভূতিগুলোর মধ্যে অন্যতম" । মায়ের কাছ থেকে শেখা এই গুণ আমার চিরকাল মনে থাকবে।
গল্পের কাকীমাদের মতো মানুষদের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, তাই আমাদের আশপাশে থাকা সে সব অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই। তাদের সহযোগিতা করি। যতটুকু সামর্থ্য আছে সেই সেটুকুই দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই। এতে আমাদের খুশি মোটেও কমবে না বরং বাড়বে।
➕➕➕➕➕➕➕➕➕