লকডাউনের আবহে টেলি-মেডিসিনের রমরমা ব্যবসা

এডমিন
0

লকডাউন 1.0 এখন অতীত, সম্প্রতি বক্স অফিসে  লকডাউন 2.0  মুক্তি পেয়েছে, চলবে মে মাসের 3 তারিখ পর্যন্ত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা না করে মানব কল্যাণের উপর জোর দিয়ে কঠিন সিদ্ধান্তটি নিতে বাধ্য হয়েছেন। এটা খুবই বাস্তব যে দেশকে মহামারীর প্রকোপ বাঁচাতে লকডাউন ছাড়া আর অন্য কোনও উপায় নেই।  উন্নতশীল মহাপরাক্রমশালী দেশগুলির বিবশতার কাহিনী কারও অগোচরে নেই। স্বাস্থ্য পরিষেবার একেবারে উপরের পায়দানে থাকা বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ এখন কোরোনার কাছে বিবশ ও পরাজিত। মৃত্যুর মিছিল ক্রমে ক্রমেই দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

এতদিন যাবৎ যাঁদের আমরা ঘেন্না করতাম যেমন পুলিশ, প্রশাসন, সরকারী হাসপাতাল ও সরকারী ডাক্তার। ভালো পরিষেবা মানেই ঝাঁ চকচকে বেসরকারি ব্যবস্থা, সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক বা স্বাস্থ্য পরিষেবা হোক বা অন্য ক্ষেত্র। প্রাইভেট ডাক্তার বাবুরা, যত বড়ই কসাই বা দানব হোক না কেন , কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু কোরোনা সব  হিসেব নিকেশে উল্টোপাল্টা করে দিয়েছে।

লকডাউনের জেরে ঘরে বসে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় বা টিভিতে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স অন্যান্য  কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা, নিরলস নিঃস্বার্থ সেবা, মর্মস্পর্শী কাহিনী পড়ে, শুনে বা দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠি। তাদের অবদানের জন্য সমস্ত দেশবাসী ঋণী।

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি  বহু চর্চিত বিষয় হল টেলি-মেডিসিনের রমরমা ব্যবসা। প্রায় সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ও তাঁদের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার বাবুরা ঘরে বসে উপার্জনের নতুন পন্থা খুঁজে বের করেছেন সেটি হলো "টেলি মেডিসিন" অর্থাৎ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুগী দেখা ও পরামর্শ প্রদান করা। কিন্তু বিনামূল্যে নয়, এর জন্য আপনাকে অনলাইনে অগ্রিম ফিস জমা দিতে হবে, তারপর নির্ধারিত দিনে, নির্ধারিত সময়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে চিকিৎসা।

মানুষ ঘরবন্দি, অসুস্থতা কোরোনাকে থোড়াই কেয়ার করে!! দিন প্রতিদিন টেলি-মেডিসিনের চাহিদা বাড়ছে। মেডিক্যাল টেলি কনসালটেন্সি স্টার্টআপ - "Practo" এর তথ্য অনুযায়ী উপভোগকর্তার সংখ্যা 100% বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের রাজ্যের বিশেষ করে কোলকাতার প্রায় সমস্ত নামকরা বেসরকারি হাসপাতাল আপের মাধ্যমে পরিষেবা শুরু হয়েছে। সাধারণত সর্দি কাশি, জ্বর, মাথাব্যথা নিয়ে মানুষ জন আতঙ্কে, ফলস্বরূপ টেলি মেডিসিনের ব্যবসা রমরমা এবং উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু সংবাদ পত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু কিছু রোগীর অভিযোগ, ডাক্তাররা পরামর্শ ফিস দুগুনা পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন। টেলি-মেডিসিনের দ্বারা রুগী দেখার বিষয়ে এমসিআই(MCI) এর স্পষ্ট দিশা নির্দেশ রয়েছে এবং সেই নির্দেশের যদি উলঙ্ঘন হয় তবে প্রশাসনের উচিৎ নড়ে চড়ে বসা।

দেশের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে যেখানে সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কোরোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, কেউ অর্থ দিয়ে, কেউ শ্রমের দ্বারা, কেউ বা গরীব দুঃস্থ এর চিকিৎসার মাধ্যমে। সেখানে বাকি বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারবাবুদেরও উচিত নিঃস্বার্থ দেশ সেবায় এগিয়ে আসা, দেশের স্বার্থে, মানবের স্বার্থে, মানবিকতার স্বার্থে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !