শ্রদ্ধাঞ্জলি
বাবার হাত ধরে স্কুল যাওয়ার সময় বাচ্চাটি দেখলো বেশ কিছু লোক দিনের বেলায় মোমবাতি জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দিনের বেলায় মোমবাতি, তার মাথায় কিছু ঢুকলো না, সচারচর দিনের বেলায় কেউ মোমবাতি জ্বালায় না। আশ্চর্য হয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করল- 'এতো লোক কেন মোমবাতি জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে আছে?"
স্বস্নেহে বাবা ছেলেকে বললেন, গত সপ্তাহে এখানে দুর্ঘটনায় যে লোকগুলো মারা গেছে, তাঁদের স্মরণে সকলে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে একত্রিত হয়েছে।
বাচ্চার মাথায় কিছুই ঢুকলো না, শ্রদ্ধাঞ্জলি ঠিক আছে, কিন্তু এতো মোমবাতি কেন বাবা? দু-একটা জ্বালালেই হতো।
হ্যাঁ......হতো।
নিষ্পাপ বাচ্চা বলল- বাবা স্কুলে ম্যাডাম শিখিয়েছে, কেউ মারা গেলে তাঁদের স্মরণে ফটোতে ফুল দিতে, মালা দিয়ে দু মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয়। মোমবাতির কথা তো ম্যাডাম বলেনি।
বাবা বেচারা বাচ্চার আগে আত্তসমর্পণ করেলেন। খুবই দুঃখজনক, কি আর বলবো, আমরা দেশি সংস্কৃতি ভূলে নকল বিদেশি সংস্কৃতির পেছন পেছন ছুটছি। লোকজন আজকাল এই বিদেশি সংস্কৃতি বেশি পছন্দ করছে" - বলেই বাবা চুপ চাপ হাঁটতে শুরু করলেন।
বাবাকে চুপ থাকতে দেখে বাচ্চা পুনঃ বলল- বাবা আমার সামনে বস্তিতে রাতের বেলা একেবারেই অন্ধকার থাকে, সেখানে একটি মোমবাতিও জ্বলে না আর এখানে দিনের বেলা হাজার হাজার মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি!! তোমার কি মনে হচ্ছে ঠিক না ভুল?
বাবার মুখে উত্তর নেই, অবুঝ বাচ্চাকে আর কি বোঝাবে!!